পৃথিবীতে তৈরি হওয়া এ যাবৎকালের সবচেয়ে শক্তিশালী রকেট ‘স্টারশিপ’ তার প্রথম মনুষ্যবিহীন যাত্রা শুরু করতে গিয়েও শেষ মুহূর্তে তা স্থগিত করেছে।
কথা ছিল এটি স্থানীয় সময় সোমবার সকালে মেক্সিকো উপসাগরের তীরবর্তী যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাস অঙ্গরাজ্যের বোকা চিকা থেকে উৎক্ষেপণ করা হবে। তারপর এটির ওপরের অংশটি পূর্ব দিকে যাবে এবং পৃথিবীর প্রায় পুরো চারপাশ জুড়ে একবার প্রদক্ষিণ করে সাগরে নেমে আসবে।
প্রায় ১২০ মিটার বা ৪০০ ফিট উঁচু এই বিশালকায় রকেটটি তৈরি করেছে মার্কিন উদ্যোক্তা ইলন মাস্কের স্পেসএক্স কোম্পানি। মানুষের তৈরি সবচেয়ে বড় ও শক্তিশালী এ রকেট উৎক্ষেপণের সময় যে ঊর্ধ্বমুখী চাপ বা ‘থ্রাস্ট’ তৈরি হবে, তার পরিমাণ এ পর্যন্ত যত রকেট তৈরি হয়েছে-তার প্রায় দ্বিগুণ।
কিন্তু উৎক্ষেপণের কয়েক মিনিট আগে জানানো হয়, রকেটটি তরল গ্যাসের জ্বালানির সঠিক চাপ রক্ষা করে এমন একটি ভালভ ‘জমে গিয়েছিল’ এবং ঠিকমত কাজ করছিল না। তাই কোন রকম ঝুঁকি না নিয়ে উৎক্ষেপণ পিছিয়ে দেবারই সিদ্ধান্ত হয়েছে।
এক টুইট বার্তায় আগামী ‘কয়েক দিনের মধ্যেই’ এটি আবার উৎক্ষেপণের চেষ্টা করা হবে বলে জানিয়েছেন ইলন মাস্ক ।
মঙ্গলগ্রহে মানুষের শহর প্রতিষ্ঠা করতে চান ইলন মাস্ক
ইলন মাস্ক চান মঙ্গলগ্রহে একসময় মানুষের একটি ‘শহর’ গড়ে উঠবে। স্টারশিপে করে মঙ্গলগ্রহে যেতে ৯ মাস লাগবে-ফিরে আসতেও লাগবে ৯ মাস। একারণে এই রকেটে এমনভাবে কেবিন সংযুক্ত হবে যাতে প্রায় ১০০ লোক যেতে পারবে।
অবশ্য চাঁদে যাবার জন্য নাসার আর্টেমিস কর্মসূচির জন্য যে রকেট তৈরি করবে স্পেসএক্স-তা হবে কিছুটা ভিন্ন ধরনের।
২০১৯ থেকে শুরু করে গত কয়েক বছরে স্পেসএক্স বেশ কয়েকটি প্রোটোটাইপ পরীক্ষা করেছে। এর মধ্যে কয়েকটি মাটিতে নেমে আসার সময় বিস্ফোরণ ঘটে ধ্বংস হয়।
তবে ২০২১ সালে স্টারশিপ এস এন ওয়ান ফাইভ সফলভাবে উৎক্ষেপণ এবং ‘সফট ল্যান্ডিং’ খাড়া অবস্থায় নিরাপদে অবতরণ-এই দুটিই করতে সক্ষম হয়।
এরপর তাদের রকেটের নিচের দিকের ৩৩টি ইঞ্জিনের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষা শেষে যুক্তরাষ্ট্রের কতৃৃপক্ষ একটি টেস্ট ফ্লাইটের অনুমতি দেয়-যা সোমবার হবার কথা ছিল, তবে এটি স্থগিত হলেও আগামী কয়েকদিনের মধ্যেই তা আবার চেষ্টা করা হবে বলে ইলন মাস্ক আশ্বাস দিচ্ছেন। সূত্র : বিবিসি বাংলা।