আর দুই সপ্তাহ পরই ভোট অনুষ্ঠিত হবে থাইল্যান্ডে। আর সেখানেই নতুন প্রধানমন্ত্রীসহ সরকার পেতে যাচ্ছে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার এই দেশটি। ভোটের আগে সাধারণ ভাবেই হেভিওয়েট প্রার্থীরা থাকেন আলোচনায়।
নির্বাচনের আগে সেটাই স্বাভাবিক হলেও আসন্ন ভোটে প্রধানমন্ত্রী পদে থাইল্যান্ডের অন্যতম প্রধান প্রার্থী পেতংতার্ন সিনাওয়াত্রা আলোচনায় এসেছেন ভিন্ন কারণে। নির্বাচনের মাত্র দুই সপ্তাহ আগে সোমবার (১ মে) তিনি একটি ছেলে শিশুর জন্ম দিয়েছেন। সোমবার এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, থাইল্যান্ডের নেতৃস্থানীয় প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী পেতংতার্ন সিনাওয়াত্রা নির্বাচনের দুই সপ্তাহ আগে সোমবার একটি শিশুর জন্ম দিয়েছেন। আসন্ন নির্বাচনে হেভিওয়েট প্রার্থী হিসেবে বাবা থাকসিন সিনাওয়াত্রা এবং ফুফু ইংলাকের পর দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার এই দেশটির ক্ষমতায় ফিরে আসার আশা করছেন তিনি।
রয়টার্স বলছে, আগামী ১৪ মে থাইল্যান্ডে সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। এর আগে সোমবার ৩৬ বছর বয়সী পেতংতার্ন তার অফিসিয়াল ফেসবুক এবং ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্টে নবজাতকের ছবিসহ সন্তান জন্মের ঘোষণা দিয়েছেন।
সোশ্যাল মিডিয়ার ওই পোস্টে বলা হয়েছে, ‘হাই, আমার নাম প্রুথাসিন সুকসাওয়াস, ডাক নাম থাসিন। সকল সমর্থনের জন্য ধন্যবাদ। কয়েক দিনের মধ্যে, প্রথমে আমার মায়ের সুস্থ হওয়ার জন্য অপেক্ষা করুন, তারপর আমি প্রেসের সাথে দেখা করব।’
পেতংতার্ন সিনাওয়াত্রার ডাকনাম উং ইং। আগামী ১৪ মে নির্বাচনকে সামনে রেখে পুরো প্রচারাভিযানের সময় প্রধানমন্ত্রী পদের প্রার্থী হিসেবে ভোটারদের জরিপে প্রথম বা দ্বিতীয় ছিলেন তিনি।
অবশ্য সোমবার পেতংতার্নের জন্ম দেওয়া শিশুটি তার দ্বিতীয় সন্তান। তবে আসন্ন নির্বাচনকে সামনে রেখে দ্বিতীয় সন্তানের আসন্ন আগমনও তাকে ভোটের প্রচারণা থেকে দূরে রাখতে পারেনি।
সংবাদমাধ্যম বলছে, থাইল্যান্ডের রাজনীতিতে সিনাওয়াত্রা পরিবারের রয়েছে ব্যাপক জনসমর্থন। অতীতে নির্বাচনে বিপুল ভোটে তাদের দল ক্ষমতায় এসেছে। আর তাই নিজের পরিবারের নামের স্বীকৃতি এবং দলের স্থায়ী জনপ্রিয়তা পেতংতার্ন সিনাওয়াত্রাকে আবার ক্ষমতায় ফিরিয়ে আনতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
রয়টার্স বলছে, নির্বাচনের আগে হওয়া সাম্প্রতিক জরিপগুলোতে বিরোধী দলগুলো বড় ব্যবধানে এগিয়ে রয়েছে বলে দেখা যাচ্ছে। আর এই বিষয়টিই বর্তমান প্রধানমন্ত্রী প্রায়ুথ চ্যান-ওচার জন্য সমস্যা তৈরি করতে পারে। মূলত পেতংতার্ন সিনাওয়াত্রার ফুফু ইংলাক সিনাওয়াত্রার নেতৃত্বাধীন গণতান্ত্রিক সরকারকে সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতাচ্যুত করে ২০১৪ সালে ক্ষমতায় এসেছিলেন প্রায়ুথ।
এছাড়া পেতংতার্ন সিনাওয়াত্রার বাবা থাকসিন সিনাওয়াত্রাও ছিলেন থাই রাজনীতিতে ব্যাপক জনপ্রিয়। বেশ ভালো অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি সত্ত্বেও ২০০৬ সালে সেনা অভ্যুত্থানে থাকসিন ও ২০১৪ সালে তার বোন ইংলাক ক্ষমতাচ্যুত হন। অবশ্য ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর কারাদণ্ড এড়াতে দু’জনই থাইল্যান্ড ছেড়ে বাইরে চলে গেছেন।
রয়টার্স বলছে, সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতা দখল করলেও ২০১৯ সালের নির্বাচনের পরে বেসামরিক প্রধানমন্ত্রী হন প্রয়ুথ। তবে আসন্ন নির্বাচনকে সামনে রেখে এপ্রিলের মাঝামাঝিতে করা একটি জরিপে প্রধানমন্ত্রী পদের প্রার্থীদের মধ্যে ১৩.৭২ শতাংশ ভোট পেয়ে চতুর্থ স্থানে ছিলেন তিনি।