উত্তর আফ্রিকার দেশ সুদানে সামরিক বাহিনীর সাথে দেশটির আধা-সামরিক বাহিনীর মধ্যকার যুদ্ধবিরতির মেয়াদ আরও ৭২ ঘণ্টা বাড়ানো হয়েছে। তবে এরপরও অব্যাহত রয়েছে লড়াই। যার কারণে সুদান ছাড়ছেন আরও বেশি মানুষ।
সুদানের সেনাপ্রধান বুরহান জানিয়েছিলেন, তারা যুদ্ধবিরতির মেয়াদ বাড়াতে চান, যদি অন্যপক্ষ রাজি হয়। অন্যপক্ষ মানে আধা-সামরিক বাহিনী র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেস (আরএসএফ)। পরে আধা-সামরিক বাহিনীর পক্ষ থেকেও জানিয়ে দেওয়া হয়, আস্তর্জাতিক, আঞ্চলিক ও জাতীয় স্তরে অনুরোধের পর তারা সংযুদ্ধবিরতির মেয়াদ আরও ৭২ ঘণ্টা বাড়াতে রাজি।
সেনাবাহিনীও এই প্রস্তাবে রাজি হয়। অবশ্য যুদ্ধবিরতির মেয়াদ আরও ৭২ ঘণ্টা বাড়াতে দুই পক্ষই রাজি হলেও সুদানে সংঘর্ষ চলছেই। রোববার মধ্যরাতে যে ৭২ ঘণ্টার যুদ্ধবিরতি শেষ হয়েছে, তার মধ্যেও সেনা ও আধা সামরিক বাহিনী লড়াই করে গেছে। বিমান-হামলা হয়েছে। হয়েছে গোলাবর্ষণও।
বার্তাসংস্থা রয়টার্স জানাচ্ছে, শনিবার রাতে রাজধানী খার্তুম শহরের মাঝখানে প্রবল লড়াই হয়েছে। তবে রোববার সকাল থেকে পরিস্থিতি শান্ত ছিল। সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, তারা খার্তুমের পশ্চিমে একটি আধা সামরিক বাহিনীর কনভয়কে ধ্বংস করেছে। আধা সামরিক বাহিনীর পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, তাদের ওপর গোলাবর্ষণ করা হচ্ছে, চলছে বিমান হামলাও।
সুদানে এই নিয়ে বেশ কয়েকবার যুদ্ধবিরতিতে একমত হলো দুই পক্ষ। কিন্তু সেই বিরতির মধ্যেই দুই পক্ষ একে অন্যকে আক্রমণ করেছে। সুদানের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, সংঘর্ষে পাঁচশ মানুষ মারা গেছেন। আহত হয়েছেন আরও দুই হাজারের বেশি মানুষ।
এদিকে সংঘর্ষের মধ্যে সুদান ছেড়ে পালাচ্ছে মানুষ। জাতিসংঘের উদ্বাস্তু বিষয়ক সংগঠন জানিয়েছে, ছয় হাজার মানুষ সেন্ট্রাল আফ্রিকান রিপাবলিকে চলে গেছেন। প্রতিবেশী দেশ চাদে গেছেন ২০ হাজার মানুষ। সুদানে ৭৫ হাজার মানুষ ঘরছাড়া। যারা সুদান ছেড়ে প্রতিবেশী দেশগুলোতে আশ্রয় নিচ্ছেন, তাদের মধ্যে ৭০ শতাংশ নারী।
এই পরিস্থিতিতে জাতিসংঘের সেক্রেটারি জেনারেল গুতেরেস সুদানে মানবিক সংকটের পরিপ্রেক্ষিতে বিশেষ দূত পাঠিয়েছেন। মার্টিন গ্রিফিথকে অবিলম্বে সুদান যেতে বলেছেন তিনি। জাতিসংঘের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, যে গতিতে সুদানের পরিস্থিতি খারাপ হচ্ছে, তাতে তারা রীতিমতো উদ্বিগ্ন।