উত্তর আফ্রিকার দেশ সুদানে সামরিক বাহিনীর সাথে দেশটির আধা-সামরিক বাহিনীর মধ্যকার চলমান সংঘাতের ফলে ৮ লাখেরও বেশি মানুষ সুদান ছেড়ে পালিয়ে যেতে পারে সতর্ক করেছে জাতিসংঘ। যদিও দেশটির লড়াইরত দুই বাহিনী একদিন আগে আবারও যুদ্ধবিরতির মেয়াদ বাড়িয়েছে।

তবে এরপরও সুদানে সংঘর্ষ অব্যাহত রয়েছে বলে শোনা যাচ্ছে। আর এই পরিস্থিতিতেই জাতিসংঘের এই সতর্কতা সামনে এলো। মঙ্গলবার (২ মে) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চলমান সংঘাতের ফলে সুদানি নাগরিক এবং দেশটিতে অস্থায়ীভাবে বসবাসকারী হাজার হাজার শরণার্থীসহ ৮ লাখেরও বেশি মানুষ সুদান ছেড়ে পালিয়ে যেতে পারে বলে জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা বলেছে।

সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় এক ব্রিফিংয়ে ইউএনএইচসিআরের শরণার্থী বিষয়ক সহকারী হাই কমিশনার রাউফ মাজউ বলেছেন, ‘সকল সংশ্লিষ্ট সরকার এবং অংশীদারদের সাথে পরামর্শ করে আমরা ৮ লাখ ১৫ হাজার লোকের একটি পরিসংখ্যানে পৌঁছেছি যারা সুদান থেকে সাতটি প্রতিবেশী দেশে পালিয়ে যেতে পারে।’

এছাড়া সংঘর্ষ শুরুর পর থেকে ইতোমধ্যেই প্রায় ৭৩ হাজার মানুষ সুদান ছেড়েছেন বলেও তিনি জানান।

আল জাজিরা বলছে, সুদান ছেড়ে যেতে পারেন এমন মানুষের বিষয়ে রাউফ মাজউ যে পরিসংখ্যান সামনে এনেছেন তাদের মধ্যে প্রায় ৫ লাখ ৮০ হাজার সুদানি নাগরিক। আর এর বাইরে অন্যরা শরণার্থী যারা নিরাপত্তার জন্য ইতোপূর্বে আফ্রিকার এই দেশটিতে বসতি স্থাপন করেছিল।

ইউএনএইচসিআর প্রধান ফিলিপ্পো গ্র্যান্ডি বলেছেন, দেশ ছাড়তে পারে এমন মানুষের এই আনুমানিক পরিসংখ্যান ইঙ্গিতপূর্ণ। এক টুইটে তিনি বলেছেন, ‘আমরা আশা করি সেখানে এমনটি ঘটবে না, তবে যদি সহিংসতা বন্ধ না হয় তবে আরও বেশি লোক নিরাপত্তার জন্য সুদান থেকে পালাতে বাধ্য হয়েছে বলে দেখতে পাবো আমরা।’

আন্তর্জাতিক এই সংস্থাটি বলেছে, গত ১৫ এপ্রিল শুরু হওয়া লড়াইয়ের পর থেকে সুদানে ইতোমধ্যেই বিপর্যয়কর মানবিক পরিস্থিতি উদ্ঘাটিত হয়েছে। সুদানের সেনাপ্রধান আবদেল ফাত্তাহ আল-বুরহান এবং আধা-সামরিক বাহিনী র‌্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেস (আরএসএফ)-এর কমান্ডার মোহাম্মদ হামদান দাগলোর মধ্যে সংঘর্ষে এখন পর্যন্ত পাঁচ শতাধিক মানুষ নিহত ও আরও হাজার হাজার মানুষ আহত হয়েছেন।

এছাড়া লাখ লাখ সুদানি নাগরিক যুদ্ধ থেকে পালাতে চাইলেও এর জন্য প্রয়োজনীয় স্ফীত ব্যয় বহন করতে অক্ষম। আর এই কারণে খাদ্য ও পানি ঘাটতি এবং ঘন ঘন বিদ্যুৎ বিভ্রাটের মধ্যেও নিজেদের বাড়িতেই কার্যত অবস্থান করছেন তারা।

সংঘর্ষ শুরুর পর জাতিসংঘ এবং অন্যান্য সাহায্য সংস্থা ইতোমধ্যেই সুদানে তাদের পরিষেবা বন্ধ করে দিয়েছে। যদিও বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি বলেছে, যুদ্ধের শুরুতে কর্মী নিহত হওয়ার পরে সোমবার নিরাপদ এলাকায় তারা আবার তাদের কার্যক্রম শুরু করেছে।