বরগুনায় নিজ বাড়িতে শফিকুল ইসলাম পনু আকন (৪৫) নামে এক আওয়ামী লীগ নেতাকে কুপিয়ে হত্যা করেছে প্রতিপক্ষরা।
এ সময় তার মুখে প্রস্রাব ও তার বুকের ওপর উঠে প্রতিপক্ষরা উল্লাস করে বলে দাবি নিহতের স্ত্রীর। মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
এ সময় তার স্ত্রীসহ উভয়পক্ষের কমপক্ষে ৬ জন গুরুতর আহত হয়েছেন।
নিহত শফিকুল বরগুনা সদর উপজেলার পাকুরগাছিয়া গ্রামের মৃত মোসলেম আলী আকনের ছেলে। তিনি আয়লা পাতাকাট ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক।
সংশ্লিষ্টরা জানান, আয়লা পাতাকাটা ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে ২০২১ সালে ৩ নম্বর ওয়ার্ড পাকুরগাছিয়ায় শফিকুল ও মোতাহার মৃধা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। নির্বাচনের দুই মাস আগে মোতাহার মৃধা ও আকাইদ হোসেন ঠাণ্ডা পনু আকনের হাত-পা ভেঙে দেন। এ ছাড়া ২০১৮ সালের ২৯ অক্টোবর ওই গ্রুপ পনু আকনকে আয়লাবাজারে জনসম্মুখে কুপিয়ে রক্তাক্ত জখম করে।
দুটি ঘটনায় কুদ্দুস খাঁ, মোতাহার মৃধা ও আকাইদ হোসেন ঠাণ্ডা আসামি হয়। ২০২১ সালের ২১ জুন নির্বাচনে মোতাহার মৃধা মেম্বার নির্বাচিত হন। পূর্বের ঘটনার ধারাবাহিকতায় মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৮টায় মোতাহার মৃধা, কুদ্দুস খাঁ ও ঠাণ্ডা বাহিনী অতর্কিত পনুর বাড়িতে হামলা করে। এ সময় পনু আকন তার বসতঘরে ছিলেন।
নিহত পনু আকনের স্ত্রী ছবি আক্তার বলেন, মোতাহার মৃধা, কুদ্দুস ও ঠাণ্ডা বাহিনীর ২০-২৫ জন সন্ত্রাসী রামদা, টেঁটা নিয়ে আমাদের বাড়িতে ঢুকে আমার স্বামীকে কুপিয়ে ও পিটিয়ে মৃত্যু নিশ্চিত করে। সন্ত্রাসীরা আমার স্বামী পনু আকনকে কমপক্ষে ৫০টি কোপ দেয়। আমাকে ও আমার ছেলেকে পিটিয়ে জখম করে।
তিনি দাবি করেন, আমার স্বামী পানি খেতে চেয়েছিল। তখন মোতাহার মৃধা পনু আকনের মুখে প্রস্রাব করে দেয়। সন্ত্রাসীরা আমার স্বামীকে হত্যা করে বুকের ওপর উঠে উল্লাস করে।
আমি আমার স্বামীকে বাঁচাতে গেলে তারা আমার ওপরও হামলা চালায়। এ ছাড়া আমার ছেলেমেয়েরও কোনো খোঁজ পাচ্ছি না। তারা জীবিত আছে কিনা জানি না।
এ বিষয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) আবদুল হালিম বলেন, খবর পেয়ে পুলিশের বেশ কয়েকটি টিম ঘটনাস্থলে যায়। আমরা আহতদের উদ্ধার করে তাদের হাসপাতালে পাঠাই। পনু আকনের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য বরগুনা সদর হাসপাতাল মর্গে রাখা হয়েছে। এ ঘটনায় জড়িতদের খুঁজে বের করতে আমাদের অভিযান চলমান।
বরগুনা থানার ওসি আলী আহম্মদ বলেন, এখন পর্যন্ত মামলা হয়নি। স্বজনরা জানিয়েছেন, ময়নাতদন্ত শেষে তারা মামলা করবেন।